খারেজাহ্ ইবনে হুযাফাহ্
(রাঃ) বলেন: রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একদা আমাদের নিকট এসে
বললেন: নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা তোমাদেরকে একটি নামায দিয়ে অনুগ্রহ করেছেন। উহা তোমাদের
জন্য লাল উটের চাইতে উত্তম। তা হচ্ছে বিতর নামায। এ নামায আদায় করার জন্য তিনি সময়
নির্ধারণ করেছেন, এশার নামাযের পর থেকে
ফজর উদিত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত। -(আবু দাউদ, অধ্যায়ঃ নামায, অনুচ্ছেদঃ বিতর নামায মুস্তাহাব, হা/১২০৮। তিরমিযি, অধ্যায়ঃ নামায, অনুচ্ছেদঃ বিতর নামাযের ফযীলত, হা/৪১৪। ইবনে মাযাহ, অধ্যায়ঃ নামায প্রতিষ্ঠা করা, অনুচ্ছেদঃ বিতর নামাযের বর্ণনা, হা/১১৫৮)
আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত,
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
বিতর নামায পড়েছেন এবং বলেছেন, হে কুরআনের অনুসারীগণ
তোমরা বিতর নামায পড়। কেননা আল্লাহ তা’আলা একক, তিনি বিতর নামায পছন্দ করেন। -(সহীহ তারগীব হাদীছ
নং ৫৯৪। ছহীহ ইবনু মাজাহ্- আলবানী হা/১/১৯৩)
উপরের হাদীস দুটি
থেকেই বুঝা যাচ্ছে বিতর সালাত একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদাত । ইমাম আবু হানিফা (রঃ)এর মতে
বিতর নামায ওয়াজিব। ইমাম মালেক, শাফেয়ী ও আহমদ ইবনে
হাম্বাল (রঃ)সহ অধিকাংশ ইমাম, মুহাদ্দিছ ও আলেমের
মতে বিতর নামায ওয়াজিব নয় বরং তা সুন্নাতে মুআক্কাদাহ্।
এ নামাযের সময় হল,
এশার নামাযের পর থেকে নিয়ে
ফজর উদিত হওয়ার আগ পর্যন্ত। উক্ত সময়ের মধ্যবর্তী সময়ে এ নামায আদায় করবে;
যেমন ইতিপূর্বে খারেজা ইবনে
হুযাফা (রাঃ) বর্ণিত হাদীছে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে শেষ রাত্রে অর্থাৎ ফজরের পূর্বে
আদায় করা উত্তম। ছহীহ হাদীছে প্রমাণিত হয়েছে যে, নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কখনো রাতের প্রথম ভাগে
কখনো দ্বিতীয় ভাগে এবং অধিকাংশ সময় শেষ ভাগে বিতর নামায পড়েছেন।
আয়েশা (রাঃ) বলেন,
রাতের প্রত্যেকভাগে রাসূলুল্লাহ্
(ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বিতর নামায পড়েছেন। রাতের প্রথমভাগে, রাতের মধ্যভাগে অতঃপর রাতের শেষভাগে বিতর পড়া তাঁর
অভ্যাসে পরিণত হয়। -(মুসলিম, অধ্যায়ঃ মুসাফিরের নামায হা/১২৩১।
বুখারী, অধ্যায়ঃ জুমআ হা/৯৪১)
জাবের (রাঃ) থেকে
বর্ণিত, তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, যে ব্যক্তি এই আশংকা করে যে, শেষ রাতে নফল নামায পড়ার জন্য উঠতে পারবে না,
তবে সে যেন রাতের প্রথমভাগেই
বিতর নামায পড়ে নেয়। আর যে ব্যক্তি শেষ রাতে ক্বিয়াম করার আগ্রহ রাখে সে যেন শেষ
রাতেই বিতর নামায পড়ে। কেননা শেষ রাতের নামাযে ফেরেশতাগণ উপস্থিত হন। আর এটাই উত্তম।
-(মুসলিম, অধ্যায়ঃ মুসাফিরের
নামায হা/১২৫৫। তিরমিযী, ইবনু মাজাহ্)
বিতর নামায মূলতঃ
তাহাজ্জুদ নামাযের অংশ। তাই রাত্রের পূরা কিয়ামুল্লায়লকেও বিভিন্ন হাদীছে বিতর বলা
হয়েছে। এই জন্যই পূর্বে উল্লেখ
করা হয়েছে যে, বিতর নামাযের উত্তম
সময় হচ্ছে শেষ রাত- যখন তাহাজ্জুদ নামায পড়া হয়। কিন্তু সঙ্গত কারণ থাকলে তা এশার
নামাযের সাথে পড়ার অনুমতি দেয়া হয়েছে- এই নামাযের প্রতি অধিক গুরুত্বারোপ করার জন্য।
বিতর নামাযের রাকাত
সংখ্যা নির্দিষ্ট একটি সংখ্যায় সীমাবদ্ধ নয় এ নামায ১, ৩, ৫, ৭, ৯, ১১ ও ১৩ রাকাত পর্যন্ত পড়া যায়।
এক রাকাত বিতর:
এক রাকাত বিতর পড়ার
নিয়ম হল, নিয়ত বেঁধে ছানা,
সূরা ফাতিহা এবং অন্য একটি
সূরা পড়ে রুকূ করবে। রুকূ থেকে উঠে দুআ কুনূত পড়বে। তারপর দু’টি সিজদা করে তাশাহুদ,
দরূদ ও দুআ পড়ে সালাম ফিরাবে।
আবদুল্লাহ ইবনে উমার
(রাযিয়াল্লাহু আনহুমা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রাতের নফল নামায দু’দু রাকাত করে পড়তেন
এবং এক রাকাত বিতর পড়তেন। -(বুখারী (বাংলা) হাদীস নং ৯৩৬, ৯৩২, ৯৩৪, মুসলিম হা/১২৫১)
আবু মিজলায হতে বর্ণিত,
তিনি বলেন, আমি ইবনু আব্বাস (রাঃ)কে বিতর নামায সম্পর্কে জিজ্ঞেস
করলাম। তিনি বললেন, আমি শুনেছি রাসূলুল্লাহ্
(ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, বিতর হচ্ছে শেষ রাতে এক রাকাত নামায। তিনি বলেন, ইবনু ওমরকেও এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করেছি। তিনিও বলেন,
আমি শুনেছি রাসূলুল্লাহ্
(ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, বিতর হচ্ছে শেষ রাতে এক রাকাত নামায। -(মুসলিম, অ্যধায়ঃ মুসাফিরের নামায, অনুচ্ছেদঃ রাতের নামায দু'দুরাকাত করে এবং বিতর শেষ রাতে এক রাকাত হা/ ১২৪৯)
ইমাম নবুবী বলেন,
এসকল হাদীছ থেকে দলীল পাওয়া
যায় যে, বিতর নামায এক রাকাত
পড়া বিশুদ্ধ এবং তা শেষ রাতে আদায় করা মুস্তাহাব। -(শরহে নবুবী ছহীহ মুসলিম,
৬/২৭৭)
তিন রাকাত বিতরঃ
এ নামায পড়ার বিশুদ্ধ
পদ্ধতি হচ্ছে দু’টি।
প্রথম পদ্ধতিঃ দু’রাকাত পড়ে সালাম
ফেরানো। অতঃপর এক রাকাত পড়া। এ পদ্ধতির দলীল হলো- আবদুল্লাহ্ ইবনে উমার (রাযিয়াল্লাহু
আনহুমা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
জনৈক ছাহাবী রাতের নামায সম্পর্কে
রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)কে জিজ্ঞেস করল। তখন রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, রাতের নামায দু’দু রাকাত করে,
যখন ফজর হওয়ার আশংকা করবে
তখন এক রাকাত বিতর পড়ে নিবে। -(ছহীহ বুখারী, অধ্যায়ঃ বিতর নামায, অনুচ্ছেদঃ বিতরের বর্ণনা। হা/৯৩২ (বাংলা বুখারী)।
মুসলিম, অধ্যায়ঃ মুসাফিরের
নামায, হা/১২৩৯)
এ পদ্ধতি অনুযায়ী
বিতর মূলত এক রাকাতই। দু’রাকাত পড়ে সালাম ফিরানো অতঃপর এক রাকাত পড়া। যেমন
ইবনে ওমর (রাঃ)কে জিজ্ঞেস করা হল দু’দু রাকাত মানে কি? তিনি বললেন: প্রত্যেক দু’রাকাত পর পর সালাম
ফিরাবে। -(মুসলিম- হা/১২৫২)
নাফে’ বলেন, আবদুল্লাহ্ বিন ওমর (রাঃ) বিতরের দু’রাকাত এবং এক রাকাতের
মাঝে সালাম ফিরাতেন এবং কোন দরকারী বিষয় থাকলে তার নির্দেশ দিতেন। -ছহীহ বুখারী,
অধ্যায়ঃ বিতর নামায,
অনুচ্ছেদঃ বিতরের বর্ণনা।
হা/৯৩২ (বাংলা বুখারী)। শায়খ বিন বায (রহঃ) বলেন, এ হাদীছটি মাওকূফ হলেও তা মারফূ হাদীছকে শক্তিশালী
করছে। তিনি বলেন, যে ব্যক্তি তিন রাকাত
বিতর পড়তে চায়, তার জন্যে এ পদ্ধতিই
সবচেয়ে উত্তম। (দ্রঃ ছালাতুল মু'মেন- সাঈদ কাহতানী
পৃঃ ৩২৫।)
দ্বিতীয় পদ্ধতিঃ
দু’রাকাত পড়ে তাশাহুদের
জন্য না বসে সালাম না ফিরিয়ে একাধারে তিন রাকাত পড়ে সালাম ফেরানো। এ কথার দলীল,
হযরত আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত,
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
তিনি রাকাত বিতর নামায পড়তেন। এর মধ্যে তাশাহুদের জন্যে বসতেন না, একাধারে তিন রাকাত পড়ে শেষ রাকাতে বসতেন ও তাশাহুদ
পড়তেন। এভাবেই বিতর পড়তেন আমীরুল মু’মেনীন হযরত ওমর বিন খাত্তাব (রাঃ)। -(হাদীছটি বর্ণনা
করেন ইমাম হাকেম, তিনি হাদীটিকে ছহীহ
বলেন।)
একাধারে তিন রাকাত
বিতর পড়ার ইঙ্গিতে আরেকটি হাদীছ পাওয়া যায়। উবাই বিন কা’ব (রাঃ) বলেন,রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বিতর নামাযে
প্রথম রাকাতে ‘সাব্বেহিসমা রাব্বিকাল
আ’লা’, দ্বিতীয় রাকাতে ‘কুল ইয়া আইয়্যুহাল কাফেরূন’ এবং তৃতীয় রাকাতে
‘কুল হুওয়াল্লাহু আহাদ’ পড়তেন। আর সবগুলো
রাকাত শেষ করেই সালাম ফেরাতেন। -(নাসাঈ, অধ্যায়ঃ ক্বিয়ামুল্লায়ল ও নফল নামায, অধ্যায়ঃ বিতরের ক্ষেত্রে উবাই বিন কা'বের হাদীছ বর্ণনায় বর্ণনাকারীদের বাক্যের মধ্যে
বিভিন্নতা। হা/১৬৮১)
আবু হুরায়রাহ্ (রাঃ)
হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, তোমরা মাগরিবের নামাযের
সাথে সাদৃশ্য করে তিন রাকাত বিতর পড়না; বরং পাঁচ রাকাত দ্বারা বা সাত রাকাত দ্বারা বা নয় রাকাত দ্বারা কিংবা এগার রাকাত
দ্বারা বিতর পড়। - তাহাভী, দারাকুতনী,
ইবনু হিব্বান ও হাকিম হাদীছটি
বর্ণনা করেছেন। হাকিম হাদীছটিকে বুখারী ও মুসলিমের শর্তানুযায়ী ছহীহ আখ্যা দিয়েছেন
এবং ইমাম যাহাবী সমর্থন করেছেন। ইবনু হাজার ও শাওকানীও ছহীহ্ বলেছেন। (দ্রঃ ফাতহুল
বারী, ২/৫৫৮, নায়লুল আউতার ৩/৪২-৪৩। শায়খ আলবানীও ছহীহ আখ্যা
দিয়েছেন (দ্রঃ ছালাতু তারাবীহ্- ৮৪ ও ৯৭ পৃঃ)
শায়খ আলবানী বলেন,
‘তিন রাকাত বিতর দু’তাশাহুদে পড়লেই তা
মাগরিবের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ হয়। আর হাদীছে এটাকেই নিষেধ করা হয়েছে। কিন্তু যদি একেবারে
শেষ রাকাতে বসে তবে কোন সাদৃশ্য হবে না। হাফেয ইবনু হাজার ফাতহুল বারীতে একথাই উল্লেখ
করেছেন । -(ফাতহুলবারী, ৪/৩০১)
পাঁচ রাকাত বিতর:
আবু আইয়্যুব আনছারী
(রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, প্রত্যেক মুসলমানের
উপর হক হচ্ছে বিতর নামায আদায় করা। অতএব যে পাঁচ রাকাত বিতর পড়তে চায় সে পাঁচ,
যে তিন রাকাত পড়তে চায় সে
তিন এবং এক রাকাত বিতর পড়তে চায় সে এক রাকাত পড়তে পারে। -(আবু দাউদ, অধ্যায়ঃ ছালাত, অনুচ্ছেদঃ বিতর নামায কত রাকাত। হা/১২১২,
ইবনু মাজাহ, অধ্যায়ঃ ছালাত প্রতিষ্ঠা করা, অনুচ্ছেদঃ বিতরের বর্ণনা তিন রাকাত, পাঁচ, সাত ও নয় রাকাত, হা/১১৮০)
আয়েশা (রাঃ) থেকে
বর্ণিত, তিনি বলেন,
নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) পাঁচ রাকাত বিতর পড়তেন। এর মধ্যে কোথাও বসতেন না একেবারে শেষ রাকাতে
বসতেন। -(মুসনাদে আহমাদ হা/২৪৫২০। সুনান নাসাঈ, অধ্যায়ঃ ক্বিয়ামুল্লায়ল ও নফল নামায,
অনুচ্ছেদঃ কিভাবে পাঁচ রাকাত
বিতর পড়বে, হা/১৬৯৮)
সাত রাকাত বিতরঃ
এই সাত রাকাত পড়ার
ক্ষেত্রে দু’রকম নিয়ম পাওয়া যায়। (১) সাত রাকাত একাধারে পড়বে। মধ্যখানে বসবে না তাশাহুদ
পড়বে না। (২) ছয় রাকাত একাধারে পড়ে তাশাহুদ পড়বে। অতঃপর সালাম না ফিরিয়েই সপ্তম
রাকাতের জন্য দাঁড়িয়ে পড়বে এবং তাশাহুদ পড়ে সালাম ফিরাবে।
প্রথম নিয়মের পক্ষে
দলীল হচ্ছেঃ
উম্মে সালামা (রাঃ)
হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পাঁচ রাকাত এবং সাত রাকাত বিতর পড়তেন। এ পাঁচ বা সাত রাকাতের
মাঝে তিনি সালাম ফেরাতেন না বা কোন কথাও বলতেন না। অর্থাৎ একাধারে পাঁচ বা সাত রাকাত
নামায পড়তেন। -(নাসাঈ, অধ্যায়ঃ ক্বিয়ামুল্লায়ল
ও নফল নামায, অনুচ্ছেদঃ কিভাবে
সাত রাকাত বিতর পড়বে, হা/১৬৯৫। ছহীহ্ নাসাঈ-
আলবানী হা/১/৩৭৫। ইবনে মাজাহ, অধ্যায়ঃ নামায প্রতিষ্ঠা
করা, অনুচ্ছেদঃ বিতরের বর্ণনা তিন
রাকাত, পাঁচ, সাত ও নয় রাকাত, হা/১১৮২। ছহীহ্ ইবনু মাজাহ্- আলবানী হা/১/১৯৭)
দ্বিতীয় পদ্ধতির
দলীল হচ্ছেঃ
আশেয়া (রাঃ) বলেন,
রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বয়বৃদ্ধ হয়ে গেলে এবং দুর্বল হয়ে পড়লে সাত রাকাত বিতর পড়েছেন।
একাধারে ছয় রাকাত পড়ে তাশাহুদে বসেছেন। তারপর সালাম না ফিরিয়েই দাঁড়িয়ে পড়েছেন
এবং সপ্তম রাকাত পড়েছেন তারপর সালাম ফিরিয়েছেন। -(সুনান নাসাঈ, অধ্যায়ঃ ক্বিয়ামুল্লায় ও নফল নামায, অনুচ্ছেদঃ
কিভাবে সাত রাকাত
বিতর পড়বে, হা/১৭০০)
নয় রাকাত বিতর:
এ নামায পড়ার পদ্ধতি
হচ্ছে একাধারে আট রাকাত পড়ে বসে তাশাহুদ পড়বে। তারপর দাঁড়িয়ে নবম রাকাত পড়বে এবং
তাশাহুদ পড়ে সালাম ফেরাবে।
সা’দ বিন হিশাম (রঃ)
বলেন, আমিএ উম্মুল মুমেনীন আয়েশা
(রাঃ)কে প্রশ্ন করলাম, আপনি রাসূলুল্লাহ্
(ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর বিতর নামায সম্পর্কে আমাকে বলুন? তিনি বললেন, আমরা তাঁর জন্য মেসওয়াক এবং ওযুর পানি প্রস্তুত
করে রাখতাম। আল্লাহর ইচ্ছায় যখন তিনি জাগ্রত হতেন তখন মেসওয়াক করতেন এবং ওযু করতেন
অতঃপর নয় রাকাত নামায আদায় করতেন। এ সময় মধ্যখানে না বসে অষ্টম রাকাতে বসতেন। বসে
আল্লাহর যিকির করতেন, তাঁর প্রশংসা করতেন
ও দুআ করতেন। অতঃপর সালাম না ফিরিয়েই দাঁড়িয়ে পড়তেন এবং নবম রাকাত আদায় করতেন।
এরপর তাশাহুদে বসে আল্লাহর যিকির করতেন, তাঁর প্রশংসা করতেন ও দুআ করতেন। অতঃপর আমাদেরকে শুনিয়ে জোরে সালাম ফিরাতেন।
- (মুসলিম, অধ্যায়ঃ মুসাফিরের
নামায। হা/১২৩৩)
এগার রাকাত বিতর:
হযরত আয়েশা (রাঃ)
হতে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ
(ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রাতে এগার রাকাত নামায পড়তেন, তম্মধ্যে এক রাকাত দ্বারা বিতর পড়তেন। অপর বর্ণনায়
বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এশা নামায থেকে ফারেগ হয়ে ফজর পর্যন্ত সময়ের মধ্যে এগার রাকাত
নামায পড়তেন। প্রতি দু’রাকাত পড়ে সালাম ফিরাতেন এবং এক রাকাতে বিতর পড়তেন।
-(মুসলিম, অধ্যায়ঃ মুসাফিরের
নামায, অনুচ্ছেদঃ রাতের নামায,
হা/১২১৬)
তের রাকাত বিতরঃ
এর দু’টি পদ্ধতিঃ (১) প্রতি
দু’রাকাত পড়ে সালাম
ফেরাবে এবং শেষে এক রাকাত বিতর পড়বে। ইবনু আব্বাস (রাঃ) রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর নামাযের বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, আমি নামাযে গিয়ে তাঁর বাম পার্শ্বে দন্ডায়মান
হলাম। তখন তিনি তাঁর ডান হাত আমার মাথায় দিয়ে ডান কানটি ঘুরিয়ে দিলেন অতঃপর আমাকে
ধরে তাঁর ডান দিকে দাঁড় করালেন। তারপর তিনি দু’রাকাত নামায আদায় করলেন, আবার দু’রাকাত আদায় করলেন, আবার দু’রাকাত আদায় করলেন, আবার দু’রাকাত আদায় করলেন, আবার দু’রাকাত আদায় করলেন, আবার দু’রাকাত আদায় করলেন, তারপর বিতর পড়লেন। অতঃপর একটু শুয়ে পড়লেন। যখন
মুআয্যিন এল, তখন দাঁড়ালেন এবং
হালকা করে দু’রাকাত নামায আদায় করলেন। এরপর ঘর থেকে বের হয়ে ফজরের নামায আদায় করলেন। -(বুখারী,
অধ্যায়ঃ বিতর নামায,
হা/৯৩৬। মুসলিম, অধ্যায়ঃ মুসাফিরের নামায। অনুচ্ছেদঃ রাতে নবী
(ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর নামায ও দু'আ, হা/১২৭৪)
(২) তের রাকাত নামায
দু’ দু রাকাত করে পড়বে
এবং শেষে একাধারে পাঁচ রাকাতের মাধ্যমে বিতর পড়বে। আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত,
তিনি বলেন,রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
রাতে তের রাকাত নামায পড়তেন। (সর্বশেষে) এর মধ্যে
পাঁচ রাকাত দ্বারা বিতর পড়তেন। এই পাঁচ রাকাতের মাঝে বসতেন না একেবারে শেষে বসতেন।
- (মুসলিম, অধ্যায়ঃ মুসাফিরের
নামায। অনুচ্ছেদঃ রাতে নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর নামায ও দু'আ, হা/১২১৭)
বিতর নামাযের শেষ
রাকাতে ক্বেরাত পড়ার পর রুকূর পূর্বে অথবা রুকূ থেকে উঠার পর- উভয় অবস্থায় দুআ ক্বনূত
পড়া জায়েয।
হাসান বিন আলী (রাঃ)
বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে বিতর নামাযে পাঠ করার জন্য নিম্ন লিখিত দুআটি শিখিয়েছেনঃ
] ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺍﻫْﺪِﻧِﻲ ﻓِﻴﻤَﻦْ ﻫَﺪَﻳْﺖَ ﻭَﻋَﺎﻓِﻨِﻲ
ﻓِﻴﻤَﻦْ ﻋَﺎﻓَﻴْﺖَ ﻭَﺗَﻮَﻟَّﻨِﻲ ﻓِﻴﻤَﻦْ ﺗَﻮَﻟَّﻴْﺖَ ﻭَﺑَﺎﺭِﻙْ ﻟِﻲ ﻓِﻴﻤَﺎ ﺃَﻋْﻄَﻴْﺖَ
ﻭَﻗِﻨِﻲ ﺷَﺮَّ ﻣَﺎ ﻗَﻀَﻴْﺖَ ﻓَﺈِﻧَّﻚَ ﺗَﻘْﻀِﻲ ﻭَﻟَﺎ ﻳُﻘْﻀَﻰ ﻋَﻠَﻴْﻚَ ﻭَﺇِﻧَّﻪُ ﻟَﺎ
ﻳَﺬِﻝُّ ﻣَﻦْ ﻭَﺍﻟَﻴْﺖَ ﻭَﻟَﺎ ﻳَﻌِﺰُّ ﻣَﻦْ ﻋَﺎﺩَﻳْﺖَ ﺗَﺒَﺎﺭَﻛْﺖَ ﺭَﺑَّﻨَﺎ ﻭَﺗَﻌَﺎﻟَﻴْﺖَ
[
উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মাহ্দিনি
ফীমান হাদায়তা ওয়া আফেনী ফীমান আফায়তা, ওয়া তাওয়াল্লানী ফীমান তাওয়াল্লায়তা ওয়া বারেক লী ফীমা আ’ত্বায়তা,
ওয়া ক্বেনী শার্রা মা ক্বাযায়তা,
ফা ইন্নাকা তাক্বযী ওয়ালা
য়্যুক্বযা আলাইকা, ওয়া ইন্নাহু লা য়্যাযিল্লু
মান ওয়ালায়তা, ওয়ালা ইয়েয্যু মান
আদায়তা, তাবারাকতা রাব্বানা
ওয়া তাআলায়তা।
অর্থঃ হে আল্লাহ্!
আমাকে সঠিক পথ দেখিয়ে তাদের অন্তর্ভূক্ত কর যাদের তুমি হেদায়াত করেছ, আমাকে নিরাপদে রেখে তাদের মধ্যে শামিল কর,
যাদের তুমি নিরাপদ রেখেছ।
তুমি আমার অভিভাবকত্ব গ্রহণ করে তাদের মধ্যে শামিল কর যাদের তুমি অভিভাবক হয়েছ। তুমি
আমাকে যা দান করেছ তাতে বরকত দাও। তুমি আমাকে সেই অনিষ্ট থেকে রক্ষা কর যা তুমি নির্ধারণ
করেছ, কারণ তুমি ফায়সালাকারী এবং
তোমার উপর কারো ফায়সালা কার্যকর হয় না। তুমি যার সাথে মিত্রতা পোষণ কর তাকে কেউ লাঞ্ছিত
করতে পারে না। আর যার সাথে শত্রুতা পোষণ কর, সে কখনো সম্মানিত হতে পারে না। হে আমাদের রব! তুমি
খুবই বরকতময়, সুউচ্চ ও সুমহান।
-(তিরমিযী, অধ্যায়ঃ বিতর নামায,
অনুচ্ছেদঃ বিতরে কুনূতের বিবরণ
হা/৪২৬। নাসাঈ, অধ্যায়ঃ কিয়ামুল্লায়ল
ও দিনের নফল নামায, অনুচ্ছেদঃ বিতরের
দু'আ হা/১৭২৫। আবু দাঊদ,
অধ্যায়ঃ বিতর নামায,
অনুচ্ছেদঃ বিতরে কুনূতের বিবরণ,
হা/১২১৪। ইবনু মাজাহ,
অধ্যায়ঃ নামায প্রতিষ্ঠা
করা ও তাতে সুন্নাত, অনুচ্ছেদঃ বিতরে কুনূতের
বিবরণ, হা/১১৬৮। শায়খ আলবানী
হাদীছটিকে ছহীহ বলেছেন, দ্রঃ ইরউয়াউল গালীল,
হা/৪৪৯। মেশকাত- আলবানী ১/৩৯৮পৃঃ
হা/ ১২৭৩।)
২) দুআ ক্বনূত হিসেবে
নীচের দুআটিও পড়া যায়ঃ
] ﺍﻟﻠﻬُﻢَّ ﺇﻧﺎَّ ﻧَﺴْﺘَﻌِﻴْﻨُﻚَ، ﻭَﻧَﺴْﺘَﻐْﻔِﺮُﻙَ،
ﻭﻻَ ﻧﻜﻔُﺮُﻙَ، ﻭﻧُﺆْﻣِﻦُ ﺑِﻚَ ﻭﻧَﺨْﻠَﻊُ ﻣَﻦْ ﻳَﻜْﻔُﺮُﻙَ، ﺍﻟﻠﻬُﻢَّ ﺇﻳّﺎَﻙَ ﻧَﻌْﺒُﺪُ،
ﻭﻟَﻚَ ﻧُﺼَﻠِّﻲْ ﻭﻧَﺴْﺠُﺪُ، ﻭﺇﻟَﻴْﻚَ ﻧَﺴْﻌﻰَ ﻭﻧَﺤْﻔِﺪُ، ﻧَﺮْﺟُﻮﺍ ﺭَﺣْﻤَﺘَﻚَ ﻭﻧَﺨْﺸﻰ
ﻋَﺬﺍَﺑَﻚَ، ﺇﻥَّ ﻋَﺬﺍَﺑَﻚَ ﺍﻟْﺠِﺪَّ ﺑِﺎﻟْﻜُﻔﺎَّﺭِ ﻣُﻠْﺤِﻖٌ، ﺍﻟﻠﻬُﻢَّ ﻋَﺬِّﺏْ ﺍﻟْﻜَﻔَﺮَﺓَ
ﺍﻟﺬِّﻳْﻦَ ﻳَﺼُﺪُّﻭْﻥَ ﻋَﻦْ ﺳَﺒِﻴْﻠِﻚَ [
অর্থঃ হে আল্লাহ্!
নিশ্চয় আমরা আপনার নিকট সাহায্য চাই, আপনার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করি, আপনার সাথে কুফরী করি না। আপনার প্রতি ঈমান রাখি। আপনার সাথে যে কুফরী করে তার
সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করি। হে আল্লাহ্ শুধুমাত্র আপনারই ইবাদত করি। আপনার জন্যই নামায
আদায় করি ও সিজদা করি। আপনার প্রতি অগ্রসর হই ও তৎপর থাকি। আপনার করুণা কামনা করি
ও শাস্তিকে ভয় করি। নিশ্চয় আপনার কঠিন শাস্তি কাফেরদেরকে স্পর্শ করবে। হে আল্লাহ্
যে সমস্ত কাফের আপনার পথ থেকে বাধা দেয় তাদেরকে শাস্তি দিন। -(ছহীহ ইবনু খুযায়মা
হা/ ১১০০। বায়হাকী সুনানে কুবরা ২/২১১। শায়খ আলবানী এর সনদকে ছহীহ বলেন)
৩) আলী বিন আবী তালেব
(রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) বিতরের শেষ রাকাতে এই দুআটি পড়তেন।
ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺇِﻧِّﻲ ﺃَﻋُﻮﺫُ ﺑِﺮِﺿَﺎﻙَ ﻣِﻦْ
ﺳَﺨَﻄِﻚَ ﻭَﺑِﻤُﻌَﺎﻓَﺎﺗِﻚَ ﻣِﻦْ ﻋُﻘُﻮﺑَﺘِﻚَ ﻭَﺃَﻋُﻮﺫُ ﺑِﻚَ ﻣِﻨْﻚَ ﻻ ﺃُﺣْﺼِﻲ ﺛَﻨَﺎﺀً
ﻋَﻠَﻴْﻚَ ﺃَﻧْﺖَ ﻛَﻤَﺎ ﺃَﺛْﻨَﻴْﺖَ ﻋَﻠَﻰ ﻧَﻔْﺴِﻚَ [
উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা
ইন্নী আঊযু বিরিযাকা মিন সাখাতিকা ওয়া বি মুআফাতিকা মিন ঊকূবাতিকা ওয়া আঊযুবিকা মিনকা
লা উহ্ছী ছানাআন্ আলাইকা, আন্তা কামা আছনায়তা
আলা নাফসিকা।
অর্থঃ হে আল্লাহ্
নিশ্চয় আমি আপনার সন্তুষ্টির মাধ্যমে আপনার অসন্তুষ্টি থেকে আশ্রয় কামনা করছি। আপনার
নিরাপত্তার মাধ্যমে আপনার শাস্তি থেকে আশ্রয় চাচ্ছি। আপনার মাধ্যমে আপনার ক্রোধ থেকে
আশ্রয় কামনা করছি। আমি আপনার গুণগাণ করে শেষ করতে পারব না। আপনি নিজের প্রশংসা যেভাবে
করেছেন আপনি সেরূপই। -(আবু দাউদ, অধ্যায়ঃ বিতর,
অনুচ্ছেদঃ বিতরে কুনূত পাঠ
করা, হা/১২১৫। নাসাঈ, অধ্যায়ঃ কিয়ামুল্লায়ল ও দিনের নফল নামায,
অনুচ্ছেদঃ বিতরের দু'আ হা/১৭২৭)
দুআ শেষ করার সময়
পাঠ করবে,
] ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻋﻠﻰ ﻧﺒﻴﻨﺎ ﻣﺤﻤﺪ ﻭﺁﻟﻪ ﻭﺻﺤﺒﻪ
ﻭﻣﻦ ﺗﺒﻌﻬﻢ ﺑﺈﺣﺴﺎﻥ ﺇﻟﻰ ﻳﻮﻡ ﺍﻟﺪﻳﻦ [
ছাল্লাল্লাহু ওয়া
সাল্লামা আলা নাবিয়্যিনা মুহাম্মাদ ওয়া আলিহি ওয়া ছাহবিহি, ওয়া মান তাবিআহুম বি ইহসানিন্ ইলা ইউমিদ্দীন ।
-(কুনূতের শেষে নবীজীর উপর দরূদ পাঠ করা ছাহাবায়ে কেরামের কর্ম থেকে ছহীহ সূত্রে প্রমাণিত। যেমনটি উল্লেখ করেছেন
শায়খ আলবানী। দ্রঃ ইরউয়াউল গালীল, ২/১৭৭)
এ সময় দু’হাত তুলে দুআ ক্বনূত
পড়তে পারবে। কেননা সাধারণ ভাবে দুআ করার সময় দু’হাত উত্তোলন করা রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বিশুদ্ধভাবে
প্রমাণিত হয়েছে।
আমাদের দেশের কতিপয়
আলেম বলে থাকেন, যার দুআ ক্বনূত মুখস্ত
নেই সে তিনবার সূরায়ে এখলাছ অবশ্যই পড়বে। নতুবা বিতর আদায় হবে না। এ ব্যাপারে আল্লামা
আবু মুহাম্মাদ আবদুল ওয়াহহাব সাদরী বলেন, একথাটি বেদলীল ও সনদহীন এবং সম্পূর্ণ মনগড়া কথা। কুরআন ও প্রিয় নবী (ছাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর হাদীছে যার কোন প্রমাণ ও সমর্থন নেই - (হেদায়াতুন্ন নবী থেকে
আইনী তোহফা ১/২২৭) ।
অতএব দুআ ক্বনূত না
জানলে তা পড়তে হবে না। কেননা, দুআ ক্বনূত পাঠ করা
যেমন ওয়াজিব নয়, তেমনি উহা জানলেও
যে সারা বছর পড়তে হবে তাও আবশ্যক নয়। বরং কখনো পড়বে কখনো ছাড়বে। এটাই সুন্নাত এবং
সালাফে সালেহীন তথা ছাহাবায়ে কেরামের নীতি।
অনিচ্ছাকৃতভাবে যদি
কারো বিতর নামায ছুটে যায়, তবে সে দিনের বেলায়
উহা কাযা আদায় করতে পারে। আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ)
থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,
] ﻣَﻦْ ﻧَﺎﻡَ ﻋَﻦْ ﻭِﺗْﺮِﻩِ ﺃَﻭْ ﻧَﺴِﻴَﻪُ
ﻓَﻠْﻴُﺼَﻠِّﻪِ ﺇِﺫَﺍ ﺫَﻛَﺮَﻩُ [
যে ব্যক্তি বিতর নামায
না পড়ে ঘুমিয়ে থাকবে অথবা উহা পড়তে ভুলে যাবে, সে যেন স্মরণ হলেই উহা আদায় করে নেয়।- ( আবু দাউদ,
অধ্যায়ঃ ছালাত, অনুচ্ছেদঃ বিতরের পর দু'আর বর্ণনা হা/১২১৯। তিরমিযী, অধ্যায়ঃ ছালাত, অনুচ্ছেদঃ কোন মানুষ যদি বিতর না পড়ে ঘুমিয়ে থাকে
বা ভুলে যায় তখন কি করবে, হা/৪২৮। হাদীছটি ছহীহ্)
_________
সংকলন ও গ্রন্থনা:
প্রখ্যাত আলেমে দ্বীন, মদীনা মুনাওয়ারা
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লিসান্স প্রাপ্ত, বহু গ্রন্থ প্রণেতা শাইখ মুহা: আব্দুল্লাহ আল কাফী।
প্রকাশনায়: জুবাইল
দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সৌদী আরব।